প্রত্যয় নিউজডেস্ক: সাভার থানার এসআই হত্যা, ২০০৭ সালে দুই র্যাব সদস্যকে হত্যা ও পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্র লুটসহ একাধিক মামলার আসামি আমিনবাজার এলাকার গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ২টার দিকে র্যাব-৪ এর একটি দল আমিনবাজার এলাকার সালেহপুরে অভিযান চালিয়ে সালাউদ্দিন ওরফে এমপি সালাউদ্দিনকে দুই সহযোগীসহ আটক করে। এ সময় ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ২ রাউন্ড গুলি, ১৯০ গ্রাম হিরোইন, ৫০০ পিস ইয়াবা ও দেশীয় অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (অপস) সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, ২০০০ সাল থেকে সাভার আমিনবাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার মধ্য দিয়ে উত্থান হয় গাংচিল বাহিনীর, যার প্রধান ছিলেন আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার। বেশিরভাগ সময় পানিবেষ্টিত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এর নাম দেয়া হয় ‘গাংচিল বাহিনী’। ২০১৭ সালে আনারের মৃত্যুর পর তার সহযোগী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে এলাকায় আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এ বাহিনী মূলত আমিনবাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, খুনসহ অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, গাংচিল বাহিনী ২০০২ সালে সাভার থানার একজন এসআইকে হত্যা, ২০০৭ সালে দুজন র্যাব সদস্যকে হত্যা, দিয়াবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্রলুট এবং আমিনবাজার এলাকায় নৌ-টহল দলের অস্ত্রলুটের সাথে জড়িত ছিল। এ বাহিনী তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীর বালুভর্তি ট্রলার, ইটের কার্গোতে ডাকাতি ও আমিনবাজার এলাকার শতাধিক ইটভাটা থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করতো। এছাড়া এলাকার প্রভাবশালীদের টার্গেট করে গাংচিল বাহিনীর সদস্যরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাইসহ তুরাগ আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুই ধারে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার ছিল এই বাহিনীর প্রধান কাজ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, তারা সব সময় নদী ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতো। এছাড়া বেশিরভাগ সময় নদীপথে যাতাযাত করে। তাদের যাতাযাতের বাহন ছিল ডাবল ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। সাভার-আমিনবাজার এলাকার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক ও তুরাগ-বুড়িগঙ্গা নদীতে চলাচলকারী বালুভর্তি ট্রলার মালিকের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা আদায় করতো তারা।
উল্লেখ্য, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের বিরুদ্ধে আগে সাভার মডেল থানায় খুন, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গ্রেফতার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।